Header Border

ঢাকা, শুক্রবার, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল) ২৯.৯৬°সে

ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে

সরকারি কবি নজরুল কলেজ প্রতিনিধিঃ ছাত্রাবাসে শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের তিন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে তিন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। আহত শিক্ষার্থীকে পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রবিবার (১লা অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে কবি নজরুল কলেজের একমাত্র আবাসিক হল শহীদ শামসুল আলম ছাত্রাবাসে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী খোরশেদ আলম বলেন, ‘ওরা আমাকে মারতে মারতে ফ্লোরে ফেলে দেয়। ফ্লোরে পড়ে যাওয়ার পরও আমার বুকে আর পিঠে ইচ্ছে মতো লাথি দিয়েছে। রুমের ঝাড়ু দিয়ে মেরেছে, এমনকি মাথায়ও আঘাত করেছে। মারধরের একপর্যায়ে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। প্রায় দুই ঘণ্টা অজ্ঞান ছিলাম, জ্ঞান ফিরলে আমি আমার এক বড় ভাইকে কল করে মারধরের বিষয়টি জানাই। পরে হলের দুই ভাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন, কবি নজরুল কলেজের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মী সাহাব উদ্দিন, কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত ও ছাত্রলীগের আরেক কর্মী মো. সাইফুল। তারা তিন জনই কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদারের অনুসারী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রাবাসের এক শিক্ষার্থী জানান, ভুক্তভোগী নিজেও কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদারের অনুসারী। যারা মারধর করেছে তারাও ফারুকের অনুসারী। মিটফোর্ড হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রানা জানান, খোরশেদের পিঠে মারাত্মক জখম হয়েছে। বুকে আর মাথায়ও সে ব্যথা পেয়েছে। আপাতত তাকে ঘুমের ও ব্যথার ইনজেকশন দিয়েছি। আর কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়েছি। জখম ভালো হতে কিছুটা সময় লাগবে। আর মাথায় আঘাতের বিষয়ে তাকে সিটি স্ক্যান করার পরামর্শ দিয়েছি।
হাসপাতালে কথা হয় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী খোরশেদ আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে। আমি শুয়ে শুয়ে মোবাইলে মুভি দেখছিলাম। এমন সময় সাহাব উদ্দিন ভাই ও তার বন্ধু ইয়াসিনসহ রুমে এসে কাপড় রাখার জায়গা খুঁজছিলেন। সাহাব উদ্দিন ভাই আমার হ্যাঙ্গার নিয়ে যাচ্ছিলেন। আমি বারণ করলে উনি আমাকে হ্যাঙ্গার দিয়েই আঘাত করে। বড় ভাইদের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হয়, ম্যানার জানিস না— বলে আমাকে মারতে শুরু করেন। পরে রুমে সাইফুল নামের আরেকজন এসে আমাকে দু’জন মিলে ইচ্ছে মতো মারতে থাকে। ইয়াসিন ভাই তখন দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। আর বলছিলেন— আজকালকার পোলাপাইন বেয়াদব, ম্যানার জানে না, ম্যানার শেখাতে হবে। আমাকে নন স্টপ নির্যাতন করা হয়। পরে জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি শুয়ে আছি, আমার মাথার কাছে একটি ফ্যান চলছে। আগে অবশ্য ফ্যানটি ছিল না।
মারধরের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির বিষয়ে এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি কি বলবো জানি না। একজন মানুষকে কেউ এভাবে মারতে পারে আমার ধারণা ছিল না। এখানে আমার কোনও অভিভাবক নেই। বাসায় পরিবারের মানুষকে জানালে, তারা অনেক টেনশন করবে।’ মারধরের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সাহাব উদ্দিনের কাছে মারধরের কারণ জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। সাইফুল ফোন রিসিভ না করে কেটে দেন। অন্যদিকে ইয়াসিন আরাফাত বলেন, ‘মারধরের ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত না। আমি বরং তাদের মারধর করতে নিষেধ করেছি‌।’
এ ঘটনায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আমেনা বেগমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হাওলাদার বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক। ঘটনা শোনামাত্রই আমি তাকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছি। তার পুরো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছি। তার যা যা প্রয়োজন সব কিছুর ব্যবস্থা করেছি।’ মারধরের ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে ছাত্রলীগের এ নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগে কোনও অনুপ্রবেশকারী বা বিতর্কিতদের স্থান নেই। যে বা যারা এর সঙ্গে জড়িত আমি তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ করবো।’ এছাড়া ভুক্তভোগী এ শিক্ষার্থীর পক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও জানান তিনি।

আপনার মতামত লিখুন :

আরও পড়ুন

দেশজুড়ে টানা বৃষ্টির সুখবর দিল আবহাওয়া অফিস
ঢাকায় আজ তাপমাত্রার সব রেকর্ড ভাঙার শঙ্কা
খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মানতে হবে নির্দেশনা
আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি
নতুন শিক্ষাক্রমে এসএসসি পরীক্ষা হবে ৫ ঘণ্টার
থাইল্যান্ড গেলেন প্রধানমন্ত্রী

আরও খবর